হাওজা নিউজ এজেন্সি: ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তাসংস্থা আইআরএনএ (IRNA) জানিয়েছে, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের উপ-মুখপাত্র টমি পিগট মঙ্গলবার রাতে (স্থানীয় সময়) এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন— মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ইরাকি প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ শিয়া আল-সুদানির সঙ্গে আলোচনায় প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলোর নিরস্ত্রীকরণের বিষয়টি উত্থাপন করেছেন।
পিগট জানান, বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে মার্কিন-বাণিজ্য চুক্তি চূড়ান্তকরণ এবং ইরাক-তুরস্ক পাইপলাইনের মাধ্যমে তেল রপ্তানি পুনরায় চালু করার বিষয়েও আলোচনা হয়। রুবিও এ উদ্যোগের জন্য ইরাকি প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়ে দাবি করেন, এতে ইরাক, তুরস্ক এবং মার্কিন কোম্পানিগুলো উপকৃত হবে।
তিনি আরও বলেন, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইরাকের সার্বভৌমত্ব রক্ষা, আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা জোরদার এবং ওয়াশিংটন-বাগদাদ অর্থনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই বিবৃতি স্পষ্টতই ওয়াশিংটনের আঞ্চলিক নীতি ও ইসরায়েলকেন্দ্রিক কৌশলের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। হামাস ও হিজবুল্লাহর পর এবার ইরাকি প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলোকেও দুর্বল করার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চাইছে।
রুবিও বৈঠকে দাবি করেন, তথাকথিত “ইরান-সমর্থিত মিলিশিয়া” ইরাকের সার্বভৌমত্ব ক্ষুণ্ণ করছে, আমেরিকান ও ইরাকি নাগরিকদের নিরাপত্তা হুমকির মুখে ফেলছে এবং ইরানের স্বার্থে ইরাকের সম্পদ ব্যবহার করছে। এই যুক্তিতে তিনি ইরাকি প্রতিরোধ যোদ্ধাদের নিরস্ত্রীকরণের আহ্বান জানান।
ওয়াশিংটনের এই অবস্থান প্রকাশিত হলো এমন এক সময়ে, যখন ইরাকের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা তেহরানে সফরে রয়েছেন এবং সেখানে ইরানের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করছেন।
পর্যবেক্ষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের এই আহ্বান শুধু ইরাকের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতেই নয়, বরং পুরো অঞ্চলে ইরানের ক্রমবর্ধমান প্রভাব রোধ এবং ইসরায়েলের কৌশলগত স্বার্থ রক্ষা করার বৃহত্তর প্রচেষ্টার অংশ।
আপনার কমেন্ট